goon [guN], nirmalendu [নির্মলেন্দু গুণ, b.1945];
nirbAchita 100 kobitA নির্বাচিত ১০০ কবিতা
Anyaprakash Dhaka (অন্যপ্রকাশ), 2004, 176 pages [12dec chittagong current bk ctr tk250 -20%]
ISBN 9848682678, 9789848682678
topics: | poetry | bengali | bangladesh
One of the most powerful poets in Bangla.
আমি যখন বাড়িতে পৌঁছলুম তখন দুপুর, আমার চতুর্দিকে চিকচিক করছে রোদ, শোঁ শোঁ করছে হাওয়া। আমার শরীরের ছায়া ঘুরতে ঘুরতে ছায়াহীন একটি রেখায় এসে দাঁড়িয়েছে৷ কেউ চিনতে পারেনি আমাকে, ট্রেনে সিগারেট জ্বালাতে গিয়ে একজনের কাছ থেকে আগুন চেয়ে নিয়েছিলুম, একজন মহকুমা স্টেশনে উঠেই আমাকে জাপটে ধরতে চেয়েছিল, একজন পেছন থেকে কাঁধে হাত রেখে চিত্কার করে উঠেছিল;- আমি সবাইকে মানুষের সমিল চেহারার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছি৷ কেউ চিনতে পারেনি আমাকে, একজন রাজনৈতিক নেতা তিনি কমিউনিস্ট ছিলেন, মুখোমুখি বসে দূর থেকে বারবার চেয়ে দেখলেন-, কিন্তু চিনতে পারলেন না৷ বারহাট্টায় নেমেই রফিজের স্টলে চা খেয়েছি, অথচ কী আশ্চর্য, পুনর্বার চিনি দিতে এসেও রফিজ আমাকে চিনলো না৷ দীর্ঘ পাঁচ বছর পর পরিবর্তনহীন গ্রামে ফিরছি আমি৷ সেই একই ভাঙাপথ, একই কালোমাটির আল ধরে গ্রামে ফেরা, আমি কতদিন পর গ্রামে ফিরছি৷ আমি যখন গ্রামে পৌঁছলুম তখন দুপুর, আমার চতুর্দিকে চিকচিক করছে রোদ, শোঁ-শোঁ করছে হাওয়া৷ অনেক বদলে গেছে বাড়িটা, টিনের চাল থেকে শুরু করে পুকুরের জল, ফুলের বাগান থেকে শুরু করে গরুর গোয়াল; চিহ্নমাত্র শৈশবের স্মৃতি যেন নেই কোনখানে৷ পড়ার ঘরের বারান্দায় নুয়ে-পড়া বেলিফুলের গাছ থেকে একটি লাউডুগী উত্তপ্ত দুপুরকে তার লক্লকে জিভ দেখালো৷ স্বতঃস্ফূর্ত মুখের দাড়ির মতো বাড়িটির চতুর্দিকে ঘাস, জঙ্গল, গর্ত, আগাছার গাঢ় বন গড়ে উঠেছে অনায়াসে; যেন সবখানেই সভ্যতাকে ব্যঙ্গ করে এখানে শাসন করছে গোঁয়ার প্রকৃতি৷ একটি শেয়াল একটি কুকুরের পাশে শুয়েছিল প্রায়, আমাকে দেখেই পালালো একজন, একজন গন্ধ শুঁকে নিয়ে আমাকে চিনতে চেষ্টা করলো- যেন পুলিশ-সমেত চেকার তেজগাঁয় আমাকে চিনতে চেষ্টা করেছিল৷ হাঁটতে- হাঁটতে একটি গাছ দেখে থমকে দাঁড়ালাম, অশোক গাছ, বাষট্টির ঝড়ে ভেঙ্গে যাওয়া অশোক, একসময়ে কী ভীষন ছায়া দিতো এই গাছটা; অনায়াসে দু’জন মানুষ মিশে থাকতে পারতো এর ছায়ায়৷ আমরা ভালোবাসার নামে একদিন সারারাত এ-গাছের ছায়ায় লুকিয়ে ছিলুম৷ সেই বাসন্তী, আহা, সেই বাসন্তী এখন বিহারে, ডাকাত স্বামীর ঘরে চার- সন্তানের জননী হয়েছে৷ পুকুরের জলে শব্দ উঠলো মাছের, আবার জিভ দেখালো সাপ, শান্ত-স্থির-বোকা গ্রামকে কাঁপিয়ে দিয়ে একটি এরোপ্লেন তখন উড়ে গেলো পশ্চিমে – -৷ আমি বাড়ির পেছন থেকে দরোজায় টোকা দিয়ে ডাকলুম,— "মা’৷ বহুদিন যে-দরোজা খোলেনি, বহুদিন যে দরোজায় কোন কন্ঠস্বর ছিল না, মরচে-পরা সেই দরোজা মুহূর্তেই ক্যাচ্ক্যাচ শব্দ করে খুলে গেলো৷ বহুদিন চেষ্টা করেও যে গোয়েন্দা-বিভাগ আমাকে ধরতে পারেনি, চৈত্রের উত্তপ্ত দুপুরে, অফুরন্ত হাওয়ার ভিতরে সেই আমি কত সহজেই একটি আলিঙ্গনের কাছে বন্দী হয়ে গেলুম; সেই আমি কত সহজেই মায়ের চোখে চোখ রেখে একটি অবুঝ সন্তান হয়ে গেলুম৷ মা আমাকে ক্রন্দনসিক্ত একটি চুম্বনের মধ্যে লুকিয়ে রেখে অনেক জঙ্গলের পথ অতিক্রম করে পুকুরের জলে চাল ধুতে গেলেন; আমি ঘরের ভিতরে তাকালুম, দেখলুম দু’ঘরের মাঝামাঝি যেখানে সিদ্ধিদাতা গণেশের ছবি ছিল, সেখানে লেনিন, বাবার জমা- খরচের পাশে কার্ল মার্কস; আলমিরার একটি ভাঙ্গা- কাচের অভাব পূরণ করছে ক্রুপস্কায়ার ছেঁড়া ছবি৷ মা পুকুর থেকে ফিরছেন, সন্ধ্যায় মহকুমা শহর থেকে ফিরবেন বাবা, তাঁর পিঠে সংসারের ব্যাগ ঝুলবে তেমনি৷ সেনবাড়ি থেকে খবর পেয়ে বৌদি আসবেন, পুনর্বার বিয়ে করতে অনুরোধ করবেন আমাকে৷ খবর পেয়ে যশমাধব থেকে আসবে ন্যাপকর্মী ইয়াসিন, তিন মাইল বিষ্টির পথ হেঁটে রসুলপুর থেকে আসবে আদিত্য৷ রাত্রে মারাত্মক অস্ত্র হাতে নিয়ে আমতলা থেকে আসবে আব্বাস৷ ওরা প্রত্যেকেই জিজ্ঞেস করবে ঢাকার খবর: – আমাদের ভবিষ্যত্ কী? – আইয়ুব খান এখন কোথায়? – শেখ মুজিব কি ভুল করেছেন? – আমার নামে কতদিন আর এরকম হুলিয়া ঝুলবে? আমি কিছুই বলবো না৷ আমার মুখের দিকে চেয়ে থাকা সারি সারি চোখের ভিতরে বাংলার বিভিন্ন ভবিষ্য়্ত্কে চেয়ে চেয়ে দেখবো৷ উত্কন্ঠিত চোখে চোখে নামবে কালো অন্ধকার, আমি চিত্কার করে কন্ঠ থেকে অক্ষম বাসনার জ্বালা মুছে নিয়ে বলবো: ‘আমি এসবের কিছুই জানি না, আমি এসবের কিছুই বুঝি না৷’
আগুন লেগেছে রক্তে মাটির গ্লোবে, যুবক গ্রীষ্মে ফাল্গুন পলাতক। পলিমাখা চাঁদ মিছিলে চন্দ্রহার উদ্বত পথে উন্নত হাত ডাকে, সূর্য ভেঙেছে অশ্লীল কারাগার। প্রতীক সূর্যে ব্যাকুল আগ্নি জ্বলে, সাম্যবাদের গর্বিত কোলাহলে আগুন লেগেছে রক্তে মাটির গ্লোবে। রক্তক্ষরণে সলিল সমাধি কার? মানুষের মুখে গোলাপের স্বরলিপি মৃত্যু এনেছে নির্মম দেবতার। পুরোভাগে হাঁটে মুক্ত-ভূমন্ডল... আগুন লেগেছে রক্তে মাটির গ্লোবে। মানুষের হাতে হত্যার অধিকার? পুষ্পের নিচে নিহত শিশুর শব, গোরস্তানেও ফসফরাসের আলো অর্জুন সবে স্বপ্নের সম্ভবে, আগুন লেগেছে রক্তে মাটির গ্লোবে।
আমি হয়তো মানুষ নই, মানুষগুলো অন্যরকম, হাঁটতে পারে, বসতে পারে, এ-ঘর থেকে ও-ঘরে যায়, মানুষগুলো অন্যরকম, সাপে কাটলে দৌড়ে পালায় । আমি হয়তো মানুষ নই, সারাটা দিন দাঁড়িয়ে থাকি, গাছের মতো দাঁড়িয়ে থাকি। সাপে কাটলে টের পাই না, সিনেমা দেখে গান গাই না, অনেকদিন বরফমাখা জল খাই না । কী করে তাও বেঁচে থাকছি, ছবি আঁকছি, সকালবেলা, দুপুরবেলা অবাক করে সারাটা দিন বেঁচেই আছি আমার মতে । অবাক লাগে । আমি হয়তো মানুষ নই, মানুষ হলে জুতো থাকতো, বাড়ি থাকতো, ঘর থাকতো, রাত্রিবেলায় ঘরের মধ্যে নারী থাকতো, পেটের পটে আমার কালো শিশু আঁকতো । আমি হয়তো মানুষ নই, মানুষ হলে আকাশ দেখে হাসবো কেন ? মানুষগুলো অন্যরকম, হাত থাকবে, নাক থাকবে, তোমার মতো চোখ থাকবে, নিকেলমাখা কী সুন্দর চোখ থাকবে ভালোবাসার কথা দিলেই কথা রাখবে । মানুষ হলে উরুর মধ্যে দাগ থাকতো , বাবা থাকতো, বোন থাকতো, ভালোবাসার লোক থাকতো, হঠাৎ করে মরে যাবার ভয় থাকতো । আমি হয়তো মানুষ নই, মানুষ হলে তোমাকে নিয়ে কবিতা লেখা আর হতো না, তোমাকে ছাড়া সারাটা রাত বেঁচে থাকাটা আর হতো না । মানুষগুলো সাপে কাটলে দৌড়ে পালায়; অথচ আমি সাপ দেখলে এগিয়ে যাই, অবহেলায় মানুষ ভেবে জাপটে ধরি ।
আমি জানি, সে তার প্রতিকৃতি কোনোদিন ফটোতে দেখেনি, আয়নায়, অথবা সন্দ্বীপে বসে যেরকম সর্বনাশা সমুদ্রে দেখা যায়, তার জলে মুখ দেখে হঠাৎ লজ্জায় সে শুধুই ম্লান হতো একদিন । আমি জানি পিঠ থেকে সুতোর কাপড় কোনোদিন খোলেনি সে পুকুরের জলে, -লজ্জা, সমস্ত কিছুতে লজ্জা ; কন্ঠে, চুলের খোঁপায়, চোখের তারায়। আমি জানি আসন্নপ্রসব-অপরাধে, অপরাধবোধে স্ফীতোদর সেই নারী কী রকম লজ্জাশীলা ছিল। অথচ কেমন আজ ভিনদেশী মানুষের চোখের সম্মুখে নগ্ন সে, নির্লজ্জ হয়ে শুয়ে আছে জলধারে পশু আর পুরুষের পাশে শুয়ে আছে। তার ছড়ানো মাংশল বাহু নগ্ন, কোমর, পায়ের পাতা, বুকের উথ্থান গুলো নগ্ন, গ্রীবার লাজুক ভাঁজ নগ্ন; – কে যেন উন্মাদ হয়ে তার সে নিঃশব্দ নগ্নতায় বসে আছে। তার সমস্ত শরীর জুড়ে প্রকৃতির নগ্ন পরিহাস, শুধু গোপন অঙ্গের লজ্জা ঢেকে আছে সদ্য-প্রসূত-মৃত সন্তানের লাশ। তার প্রতিবাদহীন স্বাধীন নগ্নতা বন্দী করে এখন সাংবাদিক, ঝুলন্ত ক্যামেরা নিয়ে ফটোগ্রাফার ফিরে যাচ্ছে পত্রিকার বিভিন্ন পাতায়। অসহায়, সূর্যের কাফনে মোড়ানো আমার বোনের মতো এই লাশ আগের মতন আর বলছে না, বলবে না; ‘আমি কিছুতেই ছবি তুলবো না......।’ যেন তার সমস্ত লজ্জার ভার এখন আমার। কেবল আমার।
% পুলিশ স্টেশনে ভিড়,আগ্নেয়াস্ত্র জমা নিচ্ছে শহরের সন্দিগ্ধ সৈনিক।সামরিক নির্দেশে ভীত মানুষের শটগান,রাইফেল,পিস্তল এবং কার্তুজ,যেন দরগার স্বীকৃত মানত,টেবিলে ফুলের মতো মস্তানের হাত। আমি শুধু সামরিক আদেশ অমান্য করে হয়ে গেছি কোমল বিদ্রোহী,প্রকাশ্যে ফিরছি ঘরে অথচ আমার সঙ্গে হৃদয়ের মতো মারাত্তক একটি আগ্নেয়াস্ত্র,আমি জমা দেইনি।
যেকোনো বাগান থেকে যেটা ইচ্ছে সেই ফুল, যেকোনো সময় আমি তুলে নিয়ে যদি কভু তোমার খোঁপায়, আহা, অজগর তোমার খোঁপায় সাজাবার সুজোগ পেতাম–; তাহলে দেখতে লীলা, তোমার শরীর ছুঁয়ে লাবণ্যের লোভন ফুলেরা উদ্বেল হৃদয়ে নিত্য বিপর্যস্ত হতো, মত্ত মমতায় বলতো আশ্চর্য হয়ে, হতো বলতেইঃ ‘খোঁপার মতন কোনো ফুলদানি নেই৷’
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উল্ঙ্গ শিশুর মত বেরিয়ে এসেছো পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবী হও। তোমার পরমায়ু বৃদ্ধি পাক আমার অস্তিত্বে, স্বপ্নে, প্রাত্যহিক বাহুর পেশীতে, জীবনের রাজপথে, মিছিলে মিছিলে; তুমি বেঁচে থাকো, তুমি দীর্ঘজীবী হও। তোমার হা-করা মুখে প্রতিদিন সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত অবধি হরতাল ছিল একদিন, ছিল ধর্মঘট, ছিলো কারখানার ধুলো। তুমি বেঁচেছিলে মানুষের কলকোলাহলে, জননীর নাভিমূলে ক্ষতচিহ্ন রেখে যে তুমি উল্ঙ্গ শিশু রাজপথে বেরিয়ে এসেছো, সে-ই তুমি আর কতদিন ‘স্বাধীনতা, স্বাধীনতা’ বলে ঘুরবে উলঙ্গ হয়ে পথে পথে সম্রাটের মতো? জননীর নাভিমূল থেকে ক্ষতচিহ্ন মুছে দিয়ে উদ্ধত হাতের মুঠোয় নেচে ওঠা, বেঁচে থাকা হে আমার দূঃখ, স্বাধীনতা, তুমিও পোশাক পরো; ক্ষান্ত করো উলঙ্গ ভ্রমণ, নয়তো আমারো শরীরি থেকে ছিঁড়ে ফেলো স্বাধীনতা নামের পতাকা। বলো উলঙ্গতা স্বাধীনতা নয়, বলো দূঃখ কোনো স্বাধীনতা নয়, বলো ক্ষুধা কোন স্বাধীনতা নয়, বলো ঘৃণা কোন স্বাধীনতা নয়। জননীর নাভিমূল ছিন্ন-করা রক্তজ কিশোর তুমি স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবী হও। তুমি বেঁচে থাকো আমার অস্তিত্বে, স্বপ্নে, প্রেমে, বল পেন্সিলের যথেচ্ছ অক্ষরে, শব্দে, যৌবনে, কবিতায়।
এইবার হাত দাও, টের পাচ্ছো আমার অস্তিত্ব ? পাচ্ছো না ? একটু দাঁড়াও আমি তৈরী হয়ে নিই । এইবার হাত দাও, টের পাচ্ছো আমার অস্তিত্ব ? পাচ্ছো না ? তেমার জন্মান্ধ চোখে শুধু ভুল অন্ধকার । ওটা নয়, ওটা চুল । এই হলো আমার আঙ্গুল, এইবার স্পর্শ করো,--না, না, না, -ওটা নয়, ওটা কন্ঠনালী, গরলবিশ্বাসী এক শিল্পীর মাটির ভাস্কর্য, ওটা অগ্নি নয়, অই আমি--আমার যৌবন । সুখের সামান্য নিচে কেটে ফেলা যন্ত্রণার কবন্ধ--প্রেমিক, ওখানে কী খোঁজ তুমি ? ওটা কিছু নয়, ওটা দুঃখ ; রমণীর ভালোবাসা না-পাওয়ার চিহ্ন বুকে নিয়ে ওটা নদী, নীল হয়ে জমে আছে ঘাসে,--এর ঠিক ডানপাশে , অইখানে হাত দাও, হ্যাঁ, ওটা বুক, অইখানে হাতা রাখো, ওটাই হৃদয় । অইখানে থাকে প্রেম, থাকে স্মৃতি, থাকে সুখ, প্রেমের সিম্পনি ; অই বুকে প্রেম ছিল, স্মৃতি ছিল, সব ছিল তুমিই থাকো নি ।
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই, দুইকে আমি এক করি না এক কে করি দুই৷ হেমের মাঝে শুই না যবে, প্রেমের মাঝে শুই তুই কেমন করে যাবি? পা বাড়ালেই পায়ের ছায়া আমাকেই তুই পাবি৷ তবুও তুই বলিস যদি যাই, দেখবি তোর সমুখে পথ নাই৷ তখন আমি একটু ছোঁব, হাত বাড়িয়ে জাড়াব তোর বিদায় দুটি পায়ে, তুই উঠবি আমার নায়ে, আমার বৈতরনী নায়ে৷ নায়ের মাঝে বসব বটে, না-এর মাঝে শোব৷ হাত দিয়েতো ছোঁব না মুখ, দু:খ দিয়ে ছোঁব৷ তুই কেমন করে যাবি?
একদিন এক বিজ্ঞ কসাই ডেকে বললোঃ ‘এই যে মশাই, বলুন দেখি, পাঁঠা কেন হিন্দুরা খায়, গরু কেন মুসলিমে?’ আমি বললামঃ ‘ সে অনেক কথা, ফ্রেশ করে তা লিখতে হবে কর্ণফুলীর এক রীমে।‘ কসাই শুনে মুচকি হাসেঃ ‘বেশ বলেছেন খাঁটি, আমি কিন্তু একি ছোরায় এই দুটোকেই কাটি।‘
আর কিছু নয়, রাজ্য চাই না, চাই না তিলক, চাই না তালুক; চাই শুধু মন-মানুষে মিলুক কবিতা আমার। সেই বিশ্বাসে যারা কাছে আসে, আর মাঝে মাঝে অপমানিতের হয়ে কথা বলি । বাঁশি যে বাজায় সে তো কংকাল, প্রাণের ভিতরে আপনি সে গায়; আপনার মাঝে নিজেকে সাজায় । শোনাতে চায় না, তবু যারা শোনে, চারপাশে যারা শ্রম ঘামে বুনে পৃথিবী সাজায়, তাদের পারি না উপেক্ষা করে পায়ের দলে পিষে নির্মল বিষে নিমগ্ন হতে । এই গ্রন্থটি লেখা হয়ে যাক, গান শোনে যারা তারা কিছু পা'ক আমার জন্য অশেষ না থাক রেশটা তো রবে, তাই দিয়ে হবে তোমার অর্ঘ্য তোমার উত্তরীয় । ঘৃণা করে যারা তারা পিছু যায়, ভালোবেসে যারা তারা কিছু পায় । এই স্বাভাবিক, আমি তবু ঠিক কুলকলরব যে নদী হারায়; তার স্তবগানে হই না মুখর । খর-বৈশাকে আমি আনি ঝড়, আমি ভালোবাসি সাহসের স্বর । প্রতিঘাতময় মুখর জীবন সোনামুখী সূচে শিল্প সীবন । আর কিছু নয়, আমার গগন- চুম্বী বাসনা মেলিয়াছে ডানা গানের ভিতরে, তার ভাষা চাই । আশা দিয়ে রোজ যে-মুখ সাজাই তার কাছে পাই যেটুকু শ্রান্তি ত্রুর কাল এসে তার সে ভ্রান্তি ধুয়ে মুছে দেয়, চিহ্ন রাখে না । এই ভেবে কত প্রেম ফেলে দেই আপন ভাবিয়া বুকে তুলে নেই অপরের ব্যথা, কতো ব্যর্থতা পায়ে দলে চলি সমুখের ডাকে; গতিচঞ্চল জীবনের বাঁকে তবু বহু ভুল থেকে যায় জানি । সতর্ক চিতে যতো যতি টানি, মানুষের লাগি যতো গীত ভানি কাল সে আসিবে, মুখখানি তার যতই দেখিব ভালোবাসিবার বাসনা জাগিবে চিতে, আসিবে না জানি, কাল চিরকালে ধরা দিতে । আগামী কালের সতনু শিখাটি পোড়াবে আমার শ্রেষ্ঠ লিখাটি । তবু কথা লিখি, তবু গান গাই, মনের ভিতরে যে মানুষ চাই তার কিছু পাই গূঢ়-চেতনায় অন্ধ প্রাণের বন্ধ বন্দী কূপে-; কিছু রেখে যাই ব্যর্থ-শিল্পরূপে ।
svAdhInatA, ei shabdaTi kIbhAbe AmAder halo একটি কবিতা লেখা হবে তার জন্য অপেক্ষার উত্তেজনা নিয়ে লক্ষ লক্ষ উন্মত্ত অধীর ব্যাকুল বিদ্রোহী শ্রোতা বসে আছে ভোর থেকে জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে: ‘কখন আসবে কবি?’ এই শিশু পার্ক সেদিন ছিল না, এই বৃক্ষে ফুলে শোভিত উদ্যান সেদিন ছিল না, এই তন্দ্রাচ্ছন্ন বিবর্ণ বিকেল সেদিন ছিল না৷ তা হলে কেমন ছিল সেদিনের সেই বিকেল বেলাটি? তা হলে কেমন ছিল শিশু পার্কে, বেঞ্চে, বৃক্ষে, ফুলের বাগানে ঢেকে দেয়া এই ঢাকার হদৃয় মাঠখানি? জানি, সেদিনের সব স্মৃতি, মুছে দিতে হয়েছে উদ্যত কালো হাত৷ তাই দেখি কবিহীন এই বিমুখ প্রান্তরে আজ কবির বিরুদ্ধে কবি, মাঠের বিরুদ্ধে মাঠ, বিকেলের বিরুদ্ধে বিকেল, উদ্যানের বিরুদ্ধে উদ্যান, মার্চের বিরুদ্ধে মার্চ ... ৷ হে অনাগত শিশু, হে আগামী দিনের কবি, শিশু পার্কের রঙিন দোলনায় দোল খেতে খেতে তুমি একদিন সব জানতে পারবে; আমি তোমাদের কথা ভেবে লিখে রেখে যাচ্ছি সেই শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প৷ সেই উদ্যানের রূপ ছিল ভিন্নতর৷ না পার্ক না ফুলের বাগান, — এসবের কিছুই ছিল না, শুধু একখন্ড অখন্ড আকাশ যেরকম, সেরকম দিগন্ত প্লাবিত ধু ধু মাঠ ছিল দূর্বাদলে ঢাকা, সবুজে সবুজময়৷ আমাদের স্বাধীনতা প্রিয় প্রাণের সবুজ এসে মিশেছিল এই ধু ধু মাঠের সবুজে৷ কপালে কব্জিতে লালসালু বেঁধে এই মাঠে ছুটে এসেছিল কারখানা থেকে লোহার শ্রমিক, লাঙল জোয়াল কাঁধে এসেছিল ঝাঁক বেঁধে উলঙ্গ কৃষক, পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে এসেছিল প্রদীপ্ত যুবক৷ হাতের মুঠোয় মৃত্যু, চোখে স্বপ্ন নিয়ে এসেছিল মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত, করুণ কেরানী, নারী, বৃদ্ধ, বেশ্যা, ভবঘুরে আর তোমাদের মত শিশু পাতা-কুড়ানীরা দল বেঁধে৷ একটি কবিতা পড়া হবে, তার জন্যে কী ব্যাকুল প্রতীক্ষা মানুষের: "কখন আসবে কবি?’ "কখন আসবে কবি?’ শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে, রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে অত:পর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন৷ তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল, হদৃয়ে লাগিল দোলা, জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার সকল দুয়ার খোলা৷ কে রোধে তাঁহার বজ্রকন্ঠ বাণী? গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর-কবিতাখানি: ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম৷’ সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের৷
১ সংগ্রামই সুন্দর সংগ্রামই সত্য; এ-ছাড়া আর যা সবই ভুল তত্ত্ব । ২ মেঘ থেকে বৃষ্টি মাটি দেয় শস্য পুড়ে-যাওয়া কাঠ দেয় ছাই ভস্ম । ৩ কোকিল প্রচার করে বসন্তের গান কবি দেন সামাজিক সত্যের সন্ধান । ৪ মার্কস, এঙ্গেলস, লেলিন... ওঁরা আসছেন; দয়া করে পথ ছেড়ে দিন । ৫ কোনোদিন শোষেকেরা হয়তো বদান্য হতে পারে; _এরকম সাধু কামনায় দিন যায় ভাবুক কবির । জানে না সে এই নীতি অবাস্তব, অচল স্থবির । ৬ শুন হে শ্রমিক ভাই সবার উপরে শ্রমিক সত্য তাহার উপরে নাই । ৭ বড়ো প্রয়োজন সামনে এসেছে ছোটো প্রয়োজন ছাড়তে হবে । জীবন হচ্ছে যুদ্ধক্ষেত্র ভুল করলেই হারতে হবে । ৮ যে নদী সাগরে মেশে তার মৃত্যু নেই, যে-কবি মিশতে পারে জনতা সাগরে, তার ভাগ্য ঐ সমুদ্রমুখী নদীর মতই । ৯ পথিক বিশ্রাম করে দেখে গর্ব করে শাল্মলীর ছায়া, বৃক্ষ নয়, যেন সেই সব । রৌদ্র কয় 'দূর হ বেহায়া' । ১০ দৃষ্টি যদি অন্ধ থাকে সমাজের দিকে লাভ নেই তার নামাজে, আহ্নিকে ।
যে বয়সে পুরুষ ভালোবাসে নারীকে, সে বয়সে তুমি ভালোবেসেছিলে তোমার মাতৃভূমি দক্ষিণ আফ্রিকাকে। যে বয়সে পুরুষ প্রার্থনা করে প্রেয়সীর বরমাল্য, সে বয়সে তোমার কণ্ঠ রুদ্ধ হয়েছে ফাঁসির রজ্জুতে। যে বয়সে পুরুষের গ্রীবা আকাঙ্ক্ষা করে রমণীর কোমল বাহুর ব্যগ্র-মুগ্ধ আলিঙ্গন, সে বয়সে তোমাকে আলিঙ্গন করেছে মৃত্যুর হিমশীতল বাহু। তোমার কলম নিঃসৃত প্রতিটি পঙক্তির জন্য যখন তোমার প্রাপ্য ছিল প্রশংসার হীরক-চুম্বন, তখন তোমার প্রাপ্য হয়েছে মৃত্যুহীরক বিষ। তোমার কবিতা আমরা একটি পড়িনি আগে। কিন্তু’ যেদিন ওরা রাতের অন্ধকারে ফাঁসিতে ঝোলাল তার পরদিন, সারা পৃথিবীর ভোরের কাগজে ছাপা হলো তোমার জীবনের শ্রেষ্ঠ কবিতা আমরা জানলাম কী গভীরভাবেই না তুমি ভালোবেসেছিলে তোমার প্রিয়তম মাতৃভূমিকে।
আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে, আমি চাই কেউ একজন আমার জন্য অপেক্ষা করুক, শুধু ঘরের ভেতর থেকে দরজা খুলে দেবার জন্য। বাইরে থেকে দরজা খুলতে খুলতে আমি এখন ক্লান্ত। আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে, আমি চাই কেউ আমাকে খেতে দিক। আমি হাত পাখা নিয়ে কাউকে আমার পাশে বসে থাকতে বলছি না। আমি জানি এই ইলেকট্রিকের যুগ নারীকে মুক্তি দিয়েছে স্বামী-সেবার দায় থেকে। আমি চাই কেউ একজন জিজ্ঞেস করুকঃ আমার জল লাগবে কিনা, আমার নুন লাগবে কিনা, পাটশাক ভাজার সঙ্গে আরোও একটা তেলে ভাজা শুকনো মরিচ লাগবে কিনা। এঁটো বাসন, গেঞ্জি-রুমাল আমি নিজেই ধুতে পারি। আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে, আমি চাই কেউ একজন ভেতর থেকে আমার ঘরের দরোজা খুলে দিক। কেউ আমাকে কিছু খেতে বলুক। কাম-বাসনার সঙ্গী না হোক, কেউ অন্তত আমাকে জিজ্ঞেস করুকঃ "তোমার চোখ এতো লাল কেন?"
huliYA হুলিয়া 9 asamApta kabitA অসমাপ্ত কবিতা 12 unnata hAt উন্নত হাত 16 mAnuSh মানুষ 17 Juddha যুদ্ধ 19 AgneYAstra আগ্নেয়াস্ত্র 20 rabIndranAther bA.NshI রবীন্দ্রনাথের বাঁশী 21 ful_dAni ফুলদানি 22 pratham atithi প্রথম অতিথি 23 salT_laker indirA সল্টলেকের ইন্দিরা 24 bishvAser Agun বিশ্বাসের আগুন 26 svAdhInatA, ula~Nga kishor স্বাধীনতা, উলঙ্গ কিশোর 28 oTA kichhu naY ওটা কিছু নয় 29 kyAmeliYA ক্যামেলিয়া 30 tumi তুমি 31 bhaY ভয় 32 AmAke kI mAlya debe আমাকে কী মাল্য দেবে 433 tumi chale JAchcchho তুমি চলে যাচ্চ্ছো 34 AmAr saM_sAr আমার সংসার 36 upekShA উপেক্ষা 37 AmAr kichhu svapna chhila আমার কিছু স্বপ্ন ছিল 38 pipIlikA পিপীলিকা 39 ek dupurer svapna এক দুপুরের স্বপ্ন 40 kyAnTane niribili ক্যান্টনে নিরিবিলি 42 kR.iShNA chaturdashI:4 কৃষ্ণা চতুর্দশী:৪ 44 JataTuku prem যতটুকু প্রেম 45 kR.iShNachURA~njali কৃষ্ণচূড়াঞ্জলি 46 nAm diYechhi bhAlobAsA নাম দিয়েছি ভালোবাসা 50 smaraN স্মরণ 56 Akrosh আক্রোশ 57 nabAgata nakShatrer Alo নবাগত নক্ষত্রের আলো 48 hAsAner janye eliji হাসানের জন্যে এলিজি 59 by_badhAn ব্যবধান 60 Ananda kusum আনন্দ কুসুম 61 tin_bhUbaner pAr তিনভূবনের পার 74 JAtrA-bha~Nga যাত্রা-ভঙ্গ 76 kasAi কসাই 77 daNDakAraNya দণ্ডকারণ্য 78 kAl se Asibe কাল সে আসিবে 80 sei rAtrir kalpakAhinI সেই রাত্রির কল্পকাহিনী 82 kaMser sAthe samudrer besh mil Achhe কংসের সাথে সমুদ্রের বেশ মিল আছে 84 nekAbbarer mahApraYAN নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ 85 tAr Age chAi samAj_tantra তার আগে চাই সমাজতন্ত্র 87 svAdhInatA, ei shabdaTi kIbhAbe AmAder halo স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো 88 nIrAr bAgAn নীরার বাগান 90 lenin bandanA লেনিন বন্দনা 91 praletAriYet প্রলেতারিয়েত 93 bachharer sheSh sUrJa বছরের শেষ সূর্য 95 bR.iShTir bandanA বৃষ্টির বন্দনা 96 rabIndra-sa~রবীন্দ্র NgIt kShet_majurer kabya ক্ষেতমজুরের কব্য 100 pR.ithibIjoRA gAn পৃথিবীজোড়া গান 103 sAtai AshARh সাতই আশাঢ় 105 sindhumAtA সিন্ধুমাতা 110 AmrA JAbo nA আমরা যাবো না 112 iskrA ইসক্রা 114 Ami biSh khAchchhi ananta আমি বিষ খাচ্ছি অনন্ত 120 16-4-84 ১৬-৪-৮৪ 121 17-4-84 ১৭-৪-৮৪ 121 10-5-84/tin ১০-৫-৮৪/তিন 125 22-5-84/ek ২২-৫-৮৪/এক 127 16-10-84 ১৬-১০-৮৪ 128 10-2-85 ১০-২-৮৫ 129 nira~njaner pR.ithibI নিরঞ্জনের পৃথিবী 130 chhuTi ছুটি 132 bhAlobAsA AmAkeo besh bhugiYechhe ভালোবাসা আমাকেও বেশ ভুগিয়েছে 34 AfrikAr premer kabitA আফ্রিকার প্রেমের কবিতা 135 kAsh_ban o AmAr mA কাশবন ও আমার মা 137 svabirodhI স্ববিরোধী 138 tomAr chokh eto lAl kena তোমার চোখ এতো লাল কেন 139 AkAsh_sirij আকাশসিরিজ 140 agnisa~Ngam অগ্নিসঙ্গম 141 sAmudrik prem সামুদ্রিক প্রেম 143 AmAr prem_JaJ~ner ashva আমার প্রেমযজ্ঞের অশ্ব 144 nuRi নুড়ি 145 myAnhATAner prati ম্যান্হাটানের প্রতি 146 bhArat AmAder gantabya naY ভারত আমাদের গন্তব্য নয় 147 ananta baraf_bIthi অনন্ত বরফবীথি 148 kabir agnikANDa কবির অগ্নিকাণ্ড 150 he ananta Ananda হে অনন্ত আনন্দ udyAn goutam গোউতম 153 AtmajIbanI : tR.itIYa khaNDa আত্মজীবনী : তৃতীয় খণ্ড 154 dui sahodarAr mAjh_khAne দুই সহোদরার মাঝখানে 155 shiYare bAM_lAdesh শিয়রে বাংলাদেশ 157 AgasT shoker mAs, kA.Ndo আগস্ট শোকের মাস, কাঁদো 158 Ami samaYke janmAte dekhechhi আমি সময়কে জন্মাতে দেখেছি 160 bAtsAYan 05 বাত্সায়ন ০৫ 162 bAtsAYan 08 বাত্সায়ন ০৮ 163 bAtsAYan 22 বাত্সায়ন ২২ 164 bAtsAYan 24 বাত্সায়ন ২৪ 166 muThofoner kAbya 30 মুঠোফোনের কাব্য ৩০ 167 muThofoner kAbya 56 মুঠোফোনের কাব্য ৫৬ 168 muThofoner kAbya 81 মুঠোফোনের কাব্য ৮১ 169 muThofoner kAbya 92 মুঠোফোনের কাব্য ৯২ 170 muThofoner kAbya 84 মুঠোফোনের কাব্য ৮৪ 171 muThofoner kAbya 86 মুঠোফোনের কাব্য ৮৬ 172 dhanyabAd garabAchebh ধন্যবাদ গরবাচেভ 173 AmerikA আমেরিকা 175
anyone can contribute their favourite extracts and scribblings to
book
excerptise.
to get started,
just send us a first writeup with
excerpts from your favourite book, headed by a short book review.
Format: plain text or wiki markup - please avoid MS word.
Email with the subject line "first writeup : name-of-book"
to (bookexcerptise [at-symbol] gmail).
Your writeup will be
circulated among the editors and should
show up soon (under your name). If you find yourself contributing
frequently, you may wish to join the editorial team.